নবম শ্রেণীর জীবন বিজ্ঞান | জীবদেহের বিকাশে পুষ্টির ভূমিকা প্রশ্নোত্তর
সুষম খাদ্য । BMR |
খাদ্য গ্রহণ শক্তির চাহিদা এবং সংশ্লিষ্ট সমস্যা dietary food intake energy requirement and associated problems
- সুষম খাদ্য সম্পর্কে ধারণা :
যেসব খাদ্য দেহের ক্যালরি চাহিদা যোগান দিতে পারে কলা কোষে বৃদ্ধি এবং গঠনমূলক কার্যকলাপ বজায় রাখতে পারে এবং দেহের শারীরবৃত্ত কার্যাবলী কে সুষ্ঠুভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে তাকে সুষম খাদ্য বা balance diet বলে । - সুষম খাদ্যে কার্বোহাইড্রেট প্রোটিন ফ্যাট ভিটামিন খনিজ লবণ জল ইত্যাদির যথাযথ অনুপাতে থাকে।
- সুষম খাদ্যের সংজ্ঞা :
ব্যাক্তি বিশেষের পুষ্টিসাধন স্বাভাবিক বৃদ্ধি কর্মশক্তি উৎপাদন দৈহিক হয় * ইত্যাদির জন্য প্রয়োজনীয় কার্বোহাইড্রেট প্রোটিন ফ্যাট খনিজ লবণ ভিটামিন উজ্জ্বল এই 6 টি উপাদান নির্দিষ্ট আনুপাতিক মিশ্রণে প্রস্তুত যে খাদ্য থেকে উপযুক্ত পরিমাণে ক্যালরি পাওয়া যায় তাকে সুষম খাদ্য বলে।- সুষম খাদ্য বলতে কোন নির্দিষ্ট খাদ্যবস্তু অর্থাৎ ডিম বা দুধ কে বোঝায় না। সুষম খাদ্য হলো বিভিন্ন খাদ্যবস্তুর এমন সমাহার যার মধ্যে খাদ্য উপাদান এর সবগুলো নির্দিষ্ট পরিমাণে থাকে। যেমন মাতৃ স্তন দুগ্ধ শিশুদের একমাত্র সুষম খাদ্য।
- মৌল বিপাকীয় হার ( basal metabolic rate or BMR ) : কোনো সুস্থ-স্বাভাবিক' ব্যক্তি হালকা খাদ্য গ্রহণের 12 থেকে 18 ঘন্টা পর সম্পূর্ণ শারীরিক ও মানসিক বিশ্রাম রত অবস্থায় এবং আরামদায়ক পরিবেশ দেহের প্রয়োজনীয় শারীরবৃত্ত কার্যকলাপ সমূহ পরিচালনার জন্য দেহ থেকে যে ন্যূনতম তাপশক্তি উৎপন্ন হয় তার হার কেই বলা হয় মৌল বিপাকীয় হার বা বেসাল মেটাবলিক রেট ( BMR )
একজন প্রাপ্তবয়স্ক লোকের BMR হল দেহ ত্বক প্রতি বর্গমিটার আয়তনের জন্য প্রতি ঘণ্টায় 40 কিলো ক্যালরি। মহিলাদের ক্ষেত্রে এর মান মাত্র 37 কিলোক্যালরি । একজন প্রাপ্তবয়স্ক অসুস্থ লোকের মৌল বিপাক এর জন্য দিনে প্রায় 1728 কিলো ক্যালরি শক্তির প্রয়োজন হয়।
- নিম্নলিখিত কিছু রোগ ও তার কারণ :
- হাইপারথাইরয়েডিজম :
- কারণ :থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে থাইরক্সিন নিঃসরণ বেশি পেলে এই রোগ হয়।
- লক্ষণ : এই রোগের ঈদ গতি বেড়ে যায় রক্তচাপ বেড়ে যায় BMR ব বৃদ্ধি পায় এবং গলগন্ড বৃদ্ধি পায় গয়টার রোগ হয়
- হাইপোথাইরয়েডিজম :
- কারণ : থাইরক্সিন গ্রন্থির কম ক্ষরণ এই রোগ হয়।
- লক্ষণ : হৃদ গতি কমে যায় , BMR কমে যায় , অস্বাভাবিক ওজন বৃদ্ধি পায়, শিশুদের ক্রেটিনিজম রোগ হয় । শিশুদের মানসিক বৃদ্ধি হয় না।
- ডায়াবেটিস মেলিটাস :
- কারণ : ইনসুলিন হরমোনের কম ক্ষরণে এই রোগ হয়।
- লক্ষণ : এই রোগে রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায়। ওজন কমে যায়। বারবার মূত্রত্যাগ হয় । ঘন ঘন তৃষ্ণা পায় । রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায় । যেসব ডায়াবেটিস ইনসুলিন নির্ভর সেই প্রকার ডায়াবেটিস TYPE 1 ডায়াবেটিস বলে । অপরপক্ষে যেসব ডায়াবেটিস ইনসুলিন নির্ভর নয় তাকে টাইপ 2 ডায়াবেটিস বলে ।
- স্থূলতা বা ওবেসিটি :
- কারণ : শারীরবৃত্তীয় কাজে ব্যস্ত শক্তির থেকে বেশি ক্যালোরি গ্রহণ করলে শরীরে অ্যাডিপোজ বা ফ্যাট সঞ্চিত হয়।
লক্ষণ : স্থূলতা বা ও বি সি টি এর কারণে উচ্চ রক্তচাপ দেখা যায় শরীরের । শরীরের ধমনীর প্রাচীরে ফ্যাট ও শ্বেত রক্তকণিকার সঞ্চয়ের ফলে ধমনীর প্রাচীর স্থূল হয় । লিভার সিরোসিস রোগ দেখা যায় । আর্থাইটিস দেখা যায় ।
- নিচের প্রশ্নগুলির উত্তর লেখ :
- সুষম খাদ্য কাকে বলে ?
- একজন প্রাপ্তবয়স্ক লোকের BMR কত ?
- ফ্যাট জাতীয় খাবারের তাপন মূল্য কত ?
- কোন হরমোন এর অধিক ক্ষরণে BMR বৃদ্ধি পায় ?
- কোন হরমোনের কম ক্ষরণে ডায়াবেটিস মেলিটাস রোগ হয় ?
- প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির স্বাভাবিক রক্তচাপ কত ?
- গয়টার রোগের কারন লেখ ।
- শিশুদের ক্ষেত্রে সুষম খাদ্য কি ?
- ডিম বা দুধকে সুষম খাদ্য বলা যাবে কি ? যুক্তি দাও ।
কোন ভিটামিন পি পি ফ্যাক্টর (PP ফ্যাক্টর)
◾ কোন ভিটামিন কে ফ্যাক্টর বলা হয় এবং কেন ?
উত্তর : ভিটামিন B3 বা নিয়াসিন কে PP ফ্যাক্টর বলা হয়।
PP কথার পুরো অর্থ হল পেলেগ্রা প্রিভেনশন বা পেলেগ্রা প্রতিরোধ। ভিটামিন B3 পেলেগ্রা রোগ হওয়া আটকায় তাই এই ভিটামিন কে পি পি ফ্যাক্টর বা পেলেগ্রা প্রিভেনটিভ ফ্যাক্টর বলা হয়।