ষষ্ঠ শ্রেণির পরিবেশ ও বিজ্ঞান প্রথম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর নিয়ে আজকের পর্বে আলোচনা করব। এই প্রশ্ন গুলি ভালোভাবে পরলে এই অধ্যায় থেকে পরিক্ষাতে প্রশ্ন আসলে অবশ্যয় পারবে।
পরিবেশ ও জীবজগতের পারস্পরিক নির্ভরতা
ষষ্ঠ শ্রেণী ঃ পরিবেশ অধ্যায় ১
পাঠ্যবই পৃষ্ঠা নং 1 থেকে 20
প্রশ্নঃ - মানুষ কিভাবে গাছেদের ওপর নির্ভর করে?
উত্তরঃ - মানুষ বিভিন্নভাবে গাছেদের ওপর নির্ভর করে।যেমন:
খাবারের জন্য : চাল, আটা, শাক-সবজি ইত্যাদি সবই উদ্ভিদ বা গাছ থেকে পাওয়া যায়।
ঘর বাড়ি ও আসবাব তৈরিতে : ঘরের কাঠের আসবাব, ঘরের চালা দেওয়া ইত্যাদি তৈরিতে গাছের বিভিন্ন অংশ ব্যবহার করা হয়।
জামা কাপড় তৈরীর জন্য : শিমুল , পাট, কার্পাস ইত্যাদি গাছ থেকে পাওয়া তন্তু দিয়ে সুতো এবং সেই সুতো দিয়ে জামা কাপড় তৈরি হয়।
অন্যান্য জিনিসের জন্য : ওষুধের জন্য উদ্ভিদের বিভিন্ন অংশ ব্যবহার করা হয়। যেমন কালমেঘের পাতা, সর্পগন্ধার মূল ইত্যাদি।
প্রশ্নঃ - প্রাণীরা কিভাবে গাছেদের ওপর নির্ভর করে?
উত্তরঃ - খাবারের জন্য : মানুষ সহ বিভিন্ন প্রাণী উদ্ভিদের মূল কাণ্ড পাতা ইত্যাদিকে খাবার রূপে গ্রহণ করে। মানুষ রান্না করে খেলেও গরু-ছাগল ইত্যাদি সরাসরি তা খাই।
বাসা তৈরীর জন্য: কাক, টিয়া কাঠবিড়ালি ইত্যাদি ছাড়াও বিভিন্ন প্রাণী গাছের উপর বাসা তৈরি করে।
প্রশ্নঃ - প্রাণী থেকে পায় এমন খাবারের উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ - গরু বা ছাগলের দুধ অথবা মুরগির মাংস ইত্যাদি।
প্রশ্নঃ - গাজরের কোন অংশ আমরা খাবার হিসেবে গ্রহণ করি?
উত্তরঃ - গাজরের মূল আমরা খাবার হিসেবে গ্রহণ করি।
প্রশ্নঃ - আদার কোন অংশ আমরা খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করি?
উত্তরঃ - আদার কান্ড আমরা খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করি।
প্রশ্নঃ - চালতার কোন অংশ আমরা খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করি?
উত্তরঃ - চালতার বৃতি আমরা খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করি।
প্রশ্নঃ - কুমড়োর কোন অংশ আমরা খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করি?
উত্তরঃ - কুমড়োর ফল, ফুল ও কান্ড আমরা খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করি।
প্রশ্নঃ - গাছে বাস করে কিন্তু বাসা বানাতে পারেনা এমন প্রাণীর উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ - বাদুড়।
প্রশ্নঃ - লাল পিঁপড়ে কিভাবে বাসা বানায়?
উত্তরঃ - লাল পিঁপড়ে যেকোনো চওড়া বা গোল পাতাওয়ালা গাছের পাতা মুড়ে সেগুলো কে জোড়া লাগিয়ে বাসা বানায়।
প্রশ্নঃ - কোন গাছের কোন অংশ দিয়ে হাত পাখা তৈরি হয়?
উত্তরঃ - তাল গাছের পাতা দিয়ে হাত পাখা তৈরি হয়।
প্রশ্নঃ - তন্তু কাকে বলে?
উত্তরঃ - সুতো যে সরু সরু সূক্ষ্ম অংশ দিয়ে গঠিত তাকে তন্তু বলে।
কাপড় → সুতো → তন্তু
প্রশ্নঃ - তন্তু দিয়ে কি তৈরি হয়?
উত্তরঃ - তন্তু দিয়ে দড়ি তৈরি হয়।
প্রশ্নঃ - তুলো গাছ এর আরেক নাম কি?
উত্তরঃ - কার্পাস।
প্রশ্নঃ - সুতির জামা কাপড় কি দিয়ে তৈরি?
উত্তরঃ - তন্তু দিয়ে ।
প্রশ্নঃ - কোন কোন গাছ থেকে তন্তু পাওয়া যায়?
উত্তরঃ - শিমুল, কার্পাস, পাট, নারকোল ইত্যাদি।
প্রশ্নঃ - রজন কোন গাছ থেকে পাওয়া যায় ? এর কাজ কি?
উত্তরঃ - রজন পাওয়া যায় পাইন বা শাল এর মত গাছ থেকে।
কাঠ পালিশ করতে রজন ব্যবহার করা হয়।
প্রশ্নঃ - রবার পাওয়া যায় কোন গাছ থেকে? এর কাজ কি?
উত্তরঃ - রবার পাওয়া যায় রবার গাছ থেকে।
রাবার দিয়ে গাড়ির টায়ার, পেন্সিলের দাগ মোছার ইরেজার ইত্যাদি তৈরি করা হয়।
প্রশ্নঃ - পেন্সিলের দাগ মোছার ইরেজার কি দিয়ে তৈরি করা হয়?
উত্তরঃ - রবার দিয়ে।
প্রশ্নঃ - কুইনাইন কি থেকে পাওয়া যায়?
উত্তরঃ - সিঙ্কোনা গাছের ছাল থেকে।
প্রশ্নঃ - ম্যালেরিয়া রোগের ওষুধ কি থেকে তৈরি হয়?
উত্তরঃ - ম্যালেরিয়া রোগের ওষুধ তৈরি হয় কুইনাইন থেকে। কুইনাইন পাওয়া যায় সিঙ্কোনা গাছের ছাল থেকে।
প্রশ্নঃ - গাছেরা খাবার তৈরি সময় কোন গ্যাস গ্রহণ করে এবং কোন গ্যাস ত্যাগ করে?
উত্তরঃ - গাছেরা খাবার তৈরীর সময় কার্বণ-ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে এবং অক্সিজেন ত্যাগ করে।
প্রশ্নঃ - পরাগ মিলন কাকে বলে?
উত্তরঃ - প্রাকৃতিক ভাবে কিংবা কোন পতঙ্গের গায়ে লেগে ফুলের পরাগরেণু যখন এক ফুল থেকে আরেক ফুলে এসে পড়ে, তখন সেই প্রক্রিয়াকে পরাগমিলন বলে।
প্রশ্নঃ - বাদুর কিভাবে উদ্ভিদের বংশ বিস্তারে সাহায্য করে?
উত্তরঃ - বাদুর ফল খেয়ে ফলের বীজ গুলো হজম করতে পারে না। ফলে ওই বীজগুলো তার মলের সঙ্গে বেরিয়ে আসে। এইভাবে বিভিন্ন প্রাণীদের মল ত্যাগের মাধ্যমে হজম না হওয়া বীজগুলো দূরে দূরে নানা জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। আর এক সময় ওই বীজগুলো থেকে চারা গাছ জন্মায়। গাছটা যে জায়গায় ছিল সেই জায়গা থেকে দূরে গাছের ফল আর বীজ এইভাবে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে।
প্রশ্নঃ - বন বিড়াল ও শিয়াল কিভাবে ফল ও বীজ এর বিস্তারে সাহায্য করে?
উত্তরঃ - চোরকাটা নামক ফলগুলি বনবিড়াল ইত্যাদি সহ প্রাণীদের গায়ে লেগে যায়। পরে ওই ফলগুলি প্রাণীদের শরীর থেকে খসে বিভিন্ন জায়গায় পড়ে এবং ফল ও বীজ এর বিস্তার ঘটে।
প্রশ্নঃ - ধানক্ষেতে এজোলা চাষ করা হয় কেন?
উত্তরঃ - ধান ক্ষেতে অ্যাজোলা পানা চাষ করলে জমিতে আর সার দিতে লাগে না। আসলে এগুলো এক ধরনের পানা এদের পাতার মধ্যে এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া আছে যারা বাতাসের নাইট্রোজেন কে বেঁধে ফেলতে পারে । তাতে অ্যাজোলার উপকার হয় কারণ স্যারের জন্য নাইট্রোজেন লাগে আর অ্যাজোলা তার পাতায় ওই ব্যাকটেরিয়াকে থাকবার জায়গা দেয় । এতে দুজনেরই বোঝাপড়া থাকে সুতরাং দুজনেরই উপকার হয়।
প্রশ্নঃ - মিথোজীবিতা কাকে বলে?
উত্তরঃ - প্রকৃতিতে এক ধরনের সম্পর্ক যেখানে দুই বা তার বেশি জীব একে অপরকে সাহায্য করে বেঁচে থাকে সেটাই হলো মিথোজীবিতা।
প্রশ্নঃ - হানিডিউ কি?
উত্তরঃ - জাবপোকা গাছের শর্করা সমৃদ্ধ রস শোষণ করে শর্করা সমৃদ্ধ বর্জ্য ত্যাগ করে এই বর্জ্যের নাম হানিডিউ।
প্রশ্নঃ - সাগর কুসুম ও ক্লাউন মাছ কিভাবে একে অপরকে সাহায্য করে?
উত্তরঃ - ক্লাউন মাছ থাকে সাগর কুসুম এর সঙ্গে। সে সাগর কুসুম এর শত্রু যেমন বাটারফ্লাই মাছ কে তাড়িয়ে দেয়। আর সাগর কুসুমের খাবারের পড়ে থাকা অংশের ভাগ পায় ক্লাউন মাছ। আবার অনেক সময় ক্লাউন মাছকে তাড়া করে আসা প্রাণীরা সাগর কুসুমের শিকার হয়।
প্রশ্নঃ - সাগরকুসুম ও সন্ন্যাসী কাঁকড়া কিভাবে একে অপরকে সাহায্য করে?
উত্তরঃ - সাগরকুসুম ও সন্ন্যাসী কাকড়ার মিথোজীবিতা: সন্ন্যাসী কাকড়ার পেটের অংশটা নরম। তাই সে বাসা বাঁধে প্রকৃত সামুদ্রিক প্রাণীর খোলসে। আর সন্ন্যাসী কাঁকড়া পিঠে করে বয়ে নিয়ে বেড়ায় সাগরকুসুমকে। সন্ন্যাসী কাকড়ার দেহ যখন বাড়ে সাগরকুসুম ও সন্ন্যাসী কাঁকড়া কে ঢেকে রাখে। সাগরকুসুম তার বিষাক্ত কাঁটার সাহায্যে সন্ন্যাসী কাঁকড়াকে রক্ষা করে। সন্ন্যাসী কাঁকড়া খাবারের খোঁজে গেলে সাগরকুসুম ও সেই খাবারের ভাগ পায়।
প্রশ্নঃ - মাংসাশী প্রাণী কাকে বলে?
উত্তরঃ - যেসব প্রাণীরা অন্য প্রাণী দের খায় তাদের মাংসাশী প্রাণী বলে ।যেমন বাঘ, সিংহ ইত্যাদি ।
প্রশ্নঃ - তৃণভোজী প্রাণী কাকে বলে?
উত্তরঃ - যেসব প্রাণী লতাপাতার ঘাস ফুল ফল ইত্যাদি খেয়ে বেঁচে থাকে তাদের তৃণভোজী প্রাণী বলে। যেমন হরিণ ছাগল গরু ইত্যাদি।
প্রশ্নঃ - পরজীবী প্রাণী কাকে বলে?
উত্তরঃ - যেসব প্রাণীরা অন্য প্রাণীদের ওপর নির্ভর করে বেঁচে থাকে তাদের পরজীবী বলে । যেমন উকুন।
প্রশ্নঃ - একটি বহিঃ পরজীবীর উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ - উকুন একটি বহিঃ পরজীবী।
প্রশ্নঃ - একটি অন্ত পরজীবীর উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ - কৃমি একটি অন্তঃপরজীবি।
প্রশ্নঃ - যক্ষার জীবাণু কোন অঙ্গে বাসা বাঁধে?
উত্তরঃ - যক্ষার জীবাণু ফুসফুস , হাড় ইত্যাদি অঙ্গে বাসা বাঁধে।
প্রশ্নঃ - ম্যালেরিয়ার জীবাণু কোন অঙ্গে বাসা বাঁধে?
উত্তরঃ - ম্যালেরিয়ার জীবাণু যকৃত ও লোহিত রক্ত কণিকায় বাসা বাঁধে।
প্রশ্নঃ - আমাশয়ের জীবাণু কোন অঙ্গে বাসা বাঁধে?
উত্তরঃ - আমাশয়ের জীবাণু অন্ত্রে বাসা বাঁধে।
প্রশ্নঃ - সিল্ক কোথা থেকে পাওয়া যায়?
উত্তরঃ - সিল্ক পাওয়া যায় রেশম মথ থেকে।
প্রশ্নঃ - কড হাঙ্গরের যকৃতের তেলে কোন ভিটামিন পাওয়া যায়?
উত্তরঃ - ভিটামিন A ও D পাওয়া যায়।
প্রশ্নঃ - পরিবেশ পরিষ্কার রাখে এমন দুটি প্রাণীর নাম লেখ।
উত্তরঃ - শকুন, কাক ইত্যাদি।
প্রশ্নঃ - হাল-বলদ এর থেকে ট্রাক্টর ব্যবহারের সুবিধাজনক কেন?
উত্তরঃ - হাল বলদ এর সাহায্যে লাঙ্গল-চষা সময় চাষির পরিশ্রম হতো অনেক। একটানা অনেকক্ষণ চাষ করতে পারত না তাছাড়া অনেক সময় লেগে যেত। ট্রাক্টর ব্যবহারে কাজ অনেক সহজ হয়ে উঠেছে। একটা না অনেক চাষ করা যায় এবং বিশ্রাম এর প্রয়োজন কম লাগে।
প্রশ্নঃ - দুধ থেকে দই তৈরিতে কোন ব্যাকটেরিয়া লাগে?
উত্তরঃ - ল্যাকটোব্যাসিলাস।
প্রশ্নঃ - কিভাবে দুধ থেকে দই এ পরিণত হয়?
উত্তরঃ - দুধের মধ্যে দইয়ের সাজা মিশিয়ে রেখে দেওয়া হয়। ওড়িশা যার মধ্যে থাকে ল্যাকটোব্যাসিলাস নামে এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া। এই ব্যাকটেরিয়া দুধে এক ধরনের এসিড তৈরি করে। সেই এসিডের নাম লেখ ঠিক আছে আরো নানান পরিবর্তন ঘটে দুধ দই এ পরিণত হয়।
প্রশ্নঃ - পাউরুটি তৈরিতে কোন ছত্রাক ব্যবহার করা হয়?
উত্তরঃ - ইস্ট
প্রশ্নঃ - পাউরুটির গায়ে ফুটো থাকে কেন?
উত্তরঃ - ময়দা বা আটা এর সাথে জল আর ইস্ট নামক এককোষী ছত্রাক মেশানো হয়। ময়দা বা আটায় থাকা শর্করাকে ইস্ট ভেঙে ফেলে আর তৈরি করে কার্বন-ডাই-অক্সাইড আর অ্যালকোহল। ময়দা বা আটা মিশ্রণকে ফুলে-ফেঁপে উঠতে সাহায্য করে এই কার্বন-ডাই-অক্সাইড । পরে ওই মিশ্রণ থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড বেরিয়ে যায় আর পাউরুটির গায়ে ফুটো ফুটো হয়ে যায়।
প্রশ্নঃ - স্টেপটোমাইসেস কি?
উত্তরঃ - স্টেপটোমাইসেস হলো এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া প্রজাতি। এই প্রজাতি থেকে প্রায় 50 টা আরো বেশি ব্যাকটেরিয়া নাশক ছত্রাক নাশক আর পরে বিচি পরজীবীনাশক অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ তৈরি হয়। স্টেপটোমাইসিন, এরিথ্রোমাইসিন ইত্যাদি হল স্ট্রেপটোমাইসিন থেকে পাওয়া এক ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ।
প্রশ্নঃ - স্টেপটোমাইসিন কি?
উত্তরঃ - এক ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ।