কবিতা স্মৃতিচিহ্ন - কামিনী রায় | সহজ বিষয়বস্তু | শব্দার্থ | প্রশ্ন উত্তর | কবি পরিচিতি

সপ্তম শ্রেণী বাংলা কবিতা স্মৃতি চিহ্ন , কামিনী রায় এর লেখা। কবিতার সারমর্ম, শব্দার্থ ও প্রশ্ন-উত্তর আলোচনা।

কবিতায় যে শব্দগুলি বোল্ড বা মোটা হরফে লেখা সেগুলিতে টাচ করে সেই শব্দগুলির অর্থ তোমরা জানতে পারবে।

কবিতা : কবিতা


স্মৃতিচিহ্ন

কামিনী রায়

ওরা ভেবেছিল মনে আপনার নাম
মনোহর হর্ম্মরূপে বিশাল অক্ষরে
ইষ্টক প্রস্তরে রচি চিরদিন তরে
রেখে যাবে! মূঢ় ওরা, ব্যর্থ মনস্কাম
প্রস্তর খসিয়াছে ভূমে প্রস্তরের পরে,
চারিদিকে ভগ্নস্তূপ, তাহাদের তলে
লুপ্ত স্মৃতি; শুষ্ক তৃণ কাল-নদী-জলে
ভেসে যায় নামগুলি, কেবা রক্ষা করে!
মানব হৃদয় ভুমি করি অধিকার,
করেছে প্রতিষ্ঠা যারা দৃঢ় সিংহাসন,
দরিদ্র আছিল তারা, ছিল না সম্বল
প্রস্তরের এত বোঝা জড় করিবার;
তাদের রাজত্ব হের অক্ষুণ্ণ কেমন
কাল স্রোতে ধৌত নাম নিত্যসমুজ্জ্বল


স্মৃতিচিহ্ন

লেখক: কামিনী রায়

সহজ ভাষায় কবিতার ব্যাখ্যা:

কবিতায় কবি কামিনী রায় বলছেন, কিছু লোক তাদের মনে ভেবেছিল যে, তারা তাদের নিজের নামটি বিশাল অক্ষরে ইষ্টক (ইট) এবং প্রস্তরে (পাথরে) রচনা করে চিরদিনের জন্য রেখে দেবে। কিন্তু তারা মূঢ় (বোকা) ছিল এবং তাদের ইচ্ছা পূরণ হয়নি। পাথরগুলি একে একে ভূমিতে পড়ে ভেঙে গেছে এবং চারিদিকে ভগ্নস্তূপ (ধ্বংসাবশেষ) পড়ে আছে। সেইসব ভগ্নস্তূপের তলে স্মৃতিগুলো হারিয়ে গেছে তাদের। শুকনো তৃণ (ঘাস) এর মত সময়রূপ নদীর জলে ভেসে যাচ্ছে এবং কেউ সেই নামগুলো রক্ষা করতে পারছে না।  

অন্যদিকে, যারা মানুষের মনকে জয় করে দৃঢ় সিংহাসন  (মজবুত রাজসিংহাসন) প্রতিষ্ঠা করেছিল, তারা দরিদ্র (গরীব) ছিল এবং তাদের কাছে ইষ্টক (ইট) এবং প্রস্তরের বোঝা জমা করার মতো সম্বল (সম্পদ) ছিল না। তাদের রাজত্ব আজও অক্ষুণ্ণ (অক্ষত) এবং কালের স্রোতে ধুয়ে গেলেও তাদের নামগুলি সবসময় উজ্জ্বল।

অর্থাৎ মূল বিষয়বস্তু : ইতিহাসের পাতায় দুই শ্রেণীর মানুষের অবস্থান কোথায় তা এই কবিতার মূল বিষয়।

স্মৃতিচিহ্ন কবিতার শব্দার্থ:

  • ওরা: তারা (they)
  • ভেবেছিল: মনে করেছিল (thought)
  • মনোহর: সুন্দর (beautiful)
  • হর্ম্মরূপে: অট্টালিকা আকারে (in the form of a palace)
  • বিশাল: বড় (large)
  • অক্ষরে: লেখা (in letters)
  • ইষ্টক: ইট (brick)
  • প্রস্তর: পাথর (stone)
  • রচি: তৈরি করা (create)
  • চিরদিন: সবসময় (forever)
  • তরে: জন্য (for)
  • রেখেযাবে: রাখবে (will keep)
  • মূঢ়: বোকা (foolish)
  • ব্যর্থ: সফল হয়নি (unsuccessful)
  • মনস্কাম: ইচ্ছা (desire)
  • ভূমে: মাটিতে (on the ground)
  • ভগ্নস্তূপ: ধ্বংসাবশেষ (ruins)
  • তাহাদের: তাদের (their)
  • তলে: নিচে (under)
  • লুপ্ত: হারিয়ে যাওয়া (lost)
  • স্মৃতি: স্মরণ (memory)
  • শুষ্ক: শুকনো (dry)
  • তৃণ: ঘাস (grass)
  • কাল-নদী: কালের নদী বা সময়রুপ নদী (river of time)
  • ভেসে যায়: ভাসতে থাকে (float away)
  • নামগুলি: নামগুলো (the names)
  • রক্ষা করে: বাঁচায় (protect)
  • মানব হৃদয়: মানুষের হৃদয় (human heart)
  • অধিকার: দখল (possession)
  • করেছে: করেছে (have done)
  • প্রতিষ্ঠা: প্রতিষ্ঠিত করা (establish)
  • দৃঢ়: মজবুত (strong)
  • সিংহাসন: রাজসিংহাসন (throne)
  • দরিদ্র: গরীব (poor)
  • সম্বল: সম্পদ (resources)
  • অক্ষুণ্ণ: অক্ষত (intact)
  • কাল স্রোতে: কালের প্রবাহে (in the flow of time)
  • ধৌত: ধোয়া (washed)
  • নিত্যসমুজ্জ্বল: সবসময় উজ্জ্বল (always bright)


Kamini Roy
কামিনী রায়

লেখিকা পরিচিতি : কামিনী রায় (১৮৬৪-১৯৩৩) বাংলা সাহিত্যের প্রখ্যাত মহিলা কবি হিসেবে সুপরিচিত। বরিশাল জেলার বাসন্ডা গ্রামে জন্মগ্রহণকারী কামিনী রায়ের পিতার নাম ছিল চণ্ডীচরণ সেন। শৈশবকাল থেকেই তিনি কবিতা রচনায় আগ্রহী ছিলেন এবং মাত্র ১৫ বছর বয়সে তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'আলো ও ছায়া' প্রকাশিত হয়। 

কামিনী রায় বেথুন কলেজ থেকে সংস্কৃতে বি.এ. পাস করেন এবং পরে একই কলেজে শিক্ষকতা শুরু করেন। তাঁর সাহিত্যকর্মের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলি হলো- 'পৌরাণিকী', 'দীপ ও ধূপ', 'জীবনপথে', 'মাল্য ও নির্মাল্য', 'অশোক সঙ্গীত' প্রভৃতি। তাঁর সাহিত্যকর্মে নারীবাদ এবং সমাজের বিভিন্ন অসঙ্গতির প্রতিফলন ঘটেছে। 

কামিনী রায়ের সাহিত্যকীর্তির জন্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে 'জগত্তারিণী স্বর্ণপদক' প্রদান করে। তিনি সাহিত্যজগতের প্রথম দিককার নারীবাদী লেখকদের মধ্যে অন্যতম এবং তাঁর সাহিত্যকর্ম আজও পাঠকদের অনুপ্রেরণা যোগায়। "স্মৃতিচিহ্ন" কবিতাটি তার "নির্মাল্য" কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত।

সংক্ষিপ্ত উত্তর:

ক. মহৎ মানুষদের জীবন কথা আমরা পাঠ করে থাকি কেন?

মহৎ মানুষদের জীবন কথা পাঠ করে আমরা অনুপ্রাণিত হই, তাদের জীবন থেকে শিক্ষা পাই এবং নিজের জীবনে সেই শিক্ষা প্রয়োগ করে উন্নতি করতে পারি।

খ. অত্যাচারী কোন কোন সাম্রাজ্যলোভী জাতির কথা তুমি ইতিহাস পড়ে জেনেছ?

ইতিহাস পড়ে আমরা রোমান, মঙ্গোল, এবং ব্রিটিশ সাম্রাজ্যলোভী জাতির কথা জেনেছি, যারা বিভিন্ন সময়ে অন্য জাতির উপর অত্যাচার করেছে।

গ. অতীত ইতিহাসের ধূসর হয়ে আসা কোন স্মারক / সৌধ / মিনার তুমি দেখেছ?

আমি দেখেছি মহাস্থানগড়, কুমিল্লার ময়নামতি, এবং পানাম নগরীর মতো ধূসর হয়ে আসা স্মারক।

ঘ. তোমার দৃষ্টিতে কাদের কথা সমাজের সকলের চিরকাল মনে রাখা উচিত?

সমাজের সকলের চিরকাল মনে রাখা উচিত তাদের, যারা সমাজের জন্য অবদান রেখেছে এবং মানবকল্যাণে কাজ করেছে।

ঙ. মানুষ নিজেকে স্মরণীয় করে রাখতে চায় কেন?

মানুষ নিজেকে স্মরণীয় করে রাখতে চায় কারণ তারা চায় তাদের কাজ এবং কীর্তি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে পৌঁছাক এবং তাদের দ্বারা সমাজ উপকৃত হোক।

শব্দার্থ:

  • হর্ম্য: অট্টালিকা।
  • ইষ্টকপ্রস্তরে: ইটপাথরে।
  • ভূম: মাটি।
  • কালনদী: সময়ের স্রোত।

বিবৃতি:

১. নীচের বিবৃতিগুলির মধ্যে সঠিক বা ভুল চিহ্নিত করো:

১.১ ইট-পাথরে গড়া সৌধ কাউকে চিরস্মরণীয় করে রাখে না। ✔️

১.২ যাঁরা নিজেদের সৌধ গড়ে কীর্তিকে অমর করে রাখতে চান তাঁরা বরেণ্য। ✘

১.৩ সাধারণ মানুষের মনে যাঁরা স্থান পেয়েছেন, তাঁদের নাম ভেসে যায়। ✘

১.৪ এমন বহু সহায়-সম্বলহীন, দরিদ্র মানুষ আছেন, মহাকাল যাঁদের স্মৃতি মুছে দিতে পারেনি। ✔️

১.৫ 'মানব হৃদয়-ভূমি' অধিকার করতে হলে মানুষের জন্য কল্যাণকর কাজ করতে হবে। ✔️

কবিতাংশের শূন্যস্থান পূরণ:

"ওরা ভেবেছিল মনে আপনার নাম

মনোহর হর্ম্মরূপে বিশাল অক্ষরে

ইষ্টক প্রস্তরে রচি চিরদিন তরে 

রেখে যাবে !"

বিপরীতার্থক শব্দ:

  • মনোহর: অমনোহর
  • বিশাল: ক্ষুদ্র
  • মূঢ়: জ্ঞানী
  • ব্যর্থ: সফল
  • ভগ্ন: অটুট
  • লুপ্ত: বিদ্যমান / উপস্থিত
  • শুষ্ক: সিক্ত
  • অধিকার: বঞ্চনা
  • দৃঢ়: দুর্বল
  • অক্ষুণ্ণ: ক্ষুণ্ণ
  • ধৌত: অপরিষ্কার
  • নিত্য: সাময়িক
  • সমুজ্জ্বল: নিভৃত


বিশেষ্য ও বিশেষণ রূপান্তর:

  • নাম: নামকরা
  • মনোহর: মনোহরী
  • প্রস্তর: প্রস্তরী
  • মূঢ়: মূঢ়তা
  • ব্যর্থ: ব্যর্থতা
  • ভগ্ন: ভগ্নাংশ
  • স্তূপ: স্তূপাকার
  • স্মৃতি: স্মৃতিকাতর
  • রক্ষা: রক্ষাকর্তা
  • মানব: মানবিক
  • হৃদয়: হৃদয়হীন
  • প্রতিষ্ঠা: প্রতিষ্ঠিত
  • দৃঢ়: দৃঢ়তা
  • দরিদ্র: দরিদ্রতা

বাক্যে ব্যবহার:

  • অক্ষর: বাংলা ভাষার প্রতিটি অক্ষর সুন্দর।
  • চিরদিন: তার কথা চিরদিন মনে রাখবো।
  • স্মৃতি: এই ছবি আমার সুন্দর স্মৃতি ধরে রাখে।
  • মানব: মানব জীবনের মূল উদ্দেশ্য সেবা।
  • রক্ষা: পরিবেশ রক্ষা আমাদের দায়িত্ব।
  • অধিকার: সবার অধিকার সমান।
  • সম্বল: জ্ঞানই মানুষের প্রকৃত সম্বল।
  • প্রতিষ্ঠা: তিনি তাঁর প্রতিষ্ঠা নিজ যোগ্যতায় অর্জন করেছেন।

সন্ধি বিচ্ছেদ:

  • মনোহর: মন + অহর
  • মনস্কাম: মন + ইস্কাম
  • ব্যর্থ: ব্য + অর্থ
  • সিংহাসন: সিংহ + আসন
  • প্রতিষ্ঠা: প্রতি + স্থা
  • সমুজ্জ্বল: সম + উজ্জ্বল
  • প্রস্তর: প্র + স্তর

গদ্যরূপ:

  • আপনার: আপনার
  • রচি: রচনা করে
  • তরে: জন্য
  • খসিছে: খসে গেছে
  • ভূমে: মাটিতে
  • আছিল: ছিল
  • হের: তাদের

সমার্থক শব্দ:

  • মন: হৃদয়
  • হর্ম্য: প্রাসাদ
  • মূঢ়: অজ্ঞান
  • দরিদ্র: গরীব
  • নদী: স্রোত

সংক্ষিপ্ত ও যথাযথ উত্তর:

৯.১ 'স্মৃতিচিহ্ন' কবিতাটি কার রচনা?

উত্তর: 'স্মৃতিচিহ্ন' কবিতাটি কামিনী রায়ের রচনা।

৯.২ কবিতাটি তাঁর কোন কাব্যগ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত?

উত্তর: কবিতাটি তাঁর 'আশা' কাব্যগ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত।

৯.৩ কবিতাটি কী জাতীয় রচনা?

উত্তর: কবিতাটি একটি মননশীল ও অনুপ্রেরণামূলক রচনা।

৯.৪ কবিতায় কবি কাদের 'মূঢ়' ও 'ব্যর্থ মনস্কাম' বলেছেন?

উত্তর: কবি তাঁদের 'মূঢ়' ও 'ব্যর্থ মনস্কাম' বলেছেন, যারা ইষ্টক প্রস্তরে নাম লিখে নিজেদের অমর করতে চেয়েছিলেন।

৯.৫ তাদের স্মৃতি কীভাবে লুপ্ত হয়ে যায়?

উত্তর: তাদের স্মৃতি ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে এবং কাল নদী জলে ভেসে যায়।

৯.৬ কারা মানুষের মনে চিরস্থায়ী আসন লাভ করে?

উত্তর: যারা মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন, তাদের নাম চিরস্থায়ী।

৯.৭ 'কাল' কে কবিতায় কীসের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে?

উত্তর: 'কাল' কে কবিতায় নদীর স্রোতের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।

৯.৮ কবিতায় 'শুষ্ক তৃণ' বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?

উত্তর: কবিতায় 'শুষ্ক তৃণ' বলতে কবি সময়ের স্রোতে ভেসে যাওয়া নাম বুঝিয়েছেন।

তিন-চারটি বাক্যে উত্তর:

১০.১ 'ওরা ভেবেছিল মনে...'- কাদের কথা বলা হয়েছে? তারা কী ভেবেছিল?

উত্তর: এখানে তাদের কথা বলা হয়েছে যারা ইষ্টক প্রস্তরে নাম লিখে নিজেদের অমর করতে চেয়েছিলেন। তারা ভেবেছিল বিশাল অক্ষরে নাম লিখে চিরদিন মনে রাখবে।

১০.২ 'মূঢ় ওরা'- কবিতায় তাদের মূঢ় বলার কারণ কী?

উত্তর: কবি তাদের মূঢ় বলেছেন কারণ তারা ভেবেছিল ইষ্টক প্রস্তরে নাম লিখে চিরকাল বেঁচে থাকবে, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তা সম্ভব হয় না।

১০.৩ 'কেবা রক্ষা করে'- কী রক্ষা করার কথা বলা হয়েছে? তা রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না কেন?

উত্তর: এখানে নাম রক্ষা করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু তা রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না কারণ সময়ের স্রোতে তা মুছে যায়।

১০.৪ 'দরিদ্র আছিল তারা'- কাদের কথা বলা হয়েছে? তাদের রাজত্ব কীভাবে অক্ষুণ্ণ রয়েছে বলে কবি মনে করেন?

উত্তর: এখানে সাধারণ মানুষের কথা বলা হয়েছে। কবি মনে করেন, তাদের রাজত্ব মানুষের হৃদয়ে অক্ষুণ্ণ রয়েছে কারণ তারা মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করেছেন।

১০.৫ কালস্রোতে কাদের নাম ধুয়ে যায়? সেই স্রোত কাদের স্মৃতি গ্রাস করতে পারে না?

উত্তর: কালস্রোতে যারা ইষ্টক প্রস্তরে নাম লিখেছেন তাদের নাম ধুয়ে যায়। কিন্তু যারা মানুষের হৃদয়ে স্থান করেছেন তাদের স্মৃতি গ্রাস করতে পারে না।

১০.৬ 'মানবহৃদয় ভূমি করি অধিকার'- কারা, কীভাবে মানবহৃদয় ভূমি অধিকার করে?

উত্তর: যারা মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন, তারা মানবহৃদয় ভূমি অধিকার করেন। তারা সেবা, প্রেম, এবং উদারতার মাধ্যমে মানুষের মনে স্থায়ী আসন করে নেন।

১০.৭ কবিতায় কবি কোন 'স্মৃতি'কে কেন অবিনশ্বর ও 'নিত্য সমুজ্জ্বল' বলেছেন?

উত্তর: কবি বলেছেন যে স্মৃতি, যা মানুষের হৃদয়ে অমর, অবিনশ্বর এবং নিত্য সমুজ্জ্বল। কারণ এই স্মৃতি কোনো ধ্বংসস্তূপ বা ইষ্টক প্রস্তর দ্বারা নয়, বরং মানুষের ভালবাসা ও শ্রদ্ধার দ্বারা অক্ষয় থাকে।

১০.৮ তোমার দৃষ্টিতে মানুষের স্মরণীয় হয়ে থাকার শ্রেষ্ঠ পন্থাটি কী?

উত্তর: আমার দৃষ্টিতে মানুষের স্মরণীয় হয়ে থাকার শ্রেষ্ঠ পন্থাটি হলো সমাজ ও মানুষের কল্যাণে অবদান রাখা। যে ব্যক্তি নিঃস্বার্থভাবে মানুষের মঙ্গল চিন্তা করে কাজ করেন, তিনি মানুষের হৃদয়ে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকেন। যেমন: সমাজসেবা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবেশ রক্ষা বা মানবাধিকারের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে কাজ করে একজন মানুষ নিজের নামকে স্মরণীয় করে রাখতে পারেন। মহৎ কাজ এবং সঠিক মূল্যবোধের প্রচারই একজন মানুষকে সত্যিকারের স্মরণীয় করে তোলে।

১০.৮ তোমার দৃষ্টিতে মানুষের স্মরণীয় হয়ে থাকার শ্রেষ্ঠ পন্থাটি কী?

উত্তর: আমার দৃষ্টিতে মানুষের স্মরণীয় হয়ে থাকার শ্রেষ্ঠ পন্থাটি হলো মানুষের কল্যাণে কাজ করা। যারা সমাজের উন্নতির জন্য অবদান রাখেন এবং মানবসেবায় নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেন, তারা মানুষের হৃদয়ে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকেন।

১১. স্মরণীয় কয়েকজন বাঙালি মনীষীর চিত্র ও বাণীসম্বলিত একটি চার্ট তৈরি করো:

এটি একটি সৃজনশীল কাজ, যার জন্য কাগজ, ছবি, এবং রঙিন পেনসিল ব্যবহার করে একটি চার্ট তৈরি করা যায়। কিছু বিশিষ্ট বাঙালি মনীষীর নাম ও বাণী:

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর: "যেখানে সত্য থাকে সেখানে দ্বিধা থাকে না।"

সুভাষচন্দ্র বসু: "তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব।"

বেগম রোকেয়া: "আমাদের সমাজে নারীরা যেন প্রদীপের মতো, সবসময় আড়ালে থাকে।"

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়: "বন্দে মাতরম, সুজলাং সুফলাং, মালয়জ শীতলাং।"

চার্টটি এমনভাবে বানানো যেতে পারে :

বাঙালি মনীষীদের বাণী চার্ট


১২. তুমি যাঁর জীবনের কথা জেনে অনুপ্রাণিত, এমন একজন মনীষীর জীবনের কোনো বিশেষ ঘটনার কথা বন্ধুকে লিখে জানাও/সে সম্বন্ধে দেওয়াল পত্রিকায় লেখা প্রকাশ করো:

আমি বেগম রোকেয়ার জীবনের একটি ঘটনা জানাতে চাই। তিনি নারীদের শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে ১৯১১ সালে কলকাতায় 'সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল' প্রতিষ্ঠা করেন। এই উদ্যোগ নারীদের শিক্ষায়নের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক স্থাপন করে।

১৩. কবিতাটি থেকে যে শিক্ষা পেলে, সে বিষয়ে একটি অনুচ্ছেদ রচনা করো:

কামিনী রায়ের 'স্মৃতিচিহ্ন' কবিতা থেকে আমরা শিখি যে মানুষের প্রকৃত অমরত্ব কোনো ইষ্টক প্রস্তরে নয়, বরং মানুষের হৃদয়ে অবস্থিত। যারা সমাজ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করেন, তাদের নাম চিরস্মরণীয় হয়ে থাকে। কবি আমাদের অনুপ্রাণিত করেন মানবকল্যাণে কাজ করার জন্য এবং সত্যিকারের অমরত্ব অর্জনের জন্য।

About the Author

Teacher , Blogger, Edu-Video Creator, Web & Android App Developer, Work under Social Audit WB Govt.

Post a Comment

Please Comment , Your Comment is Very Important to Us.

All Chapter Contents

Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.