Class 9 physical science acid । অ্যাসিড কাকে । আরহেনিয়াস এর তত্ত্ব ও লুইস তত্ত্ব অনুযায়ী অ্যাসিড এর সংজ্ঞা ইত্যাদি হল আজকের আলোচ্য বিষয় ।
অ্যাসিড কাকে । অ্যাসিড এর প্রকারভেদ । অ্যাসিডের বৈশিষ্ট্য । অ্যাসিডের ক্ষার গ্রহীতা
যেসব যৌগের মধ্যে ধাতব মূলক দ্বারা প্রতিস্থাপনযোগ্য এক বা একাধিক হাইড্রোজেন পরমাণু থাকে, ক্ষারকের সঙ্গে বিক্রিয়া করে লবণ ও জল উৎপন্ন করে এবং নীল লিটমাসকে লাল করে, সেইসব যৌগকে সাধারণভাবে অ্যাসিড বলে।
যেমন: HCl +NaOH = NaCl + H2O
আরহেনিয়াস এর তত্ত্ব অনুযায়ী অ্যাসিড এর সংজ্ঞা লেখ
যে সমস্ত হাইড্রোজেন সমন্বিত যৌগ জলীয় দ্রবণে আয়নিত হয়ে ক্যাটায়ন হিসাবে কেবলমাত্র H+ আয়ন উৎপন্ন করে তাদের অ্যাসিড বলে।
উদাহরণ: H2SO4, HCl, CH3COOH প্রভৃতি হাইড্রোজেন সমন্বিত যৌগগুলি জলীয় দ্রবণে হাইড্রোজেন আয়ন উৎপন্ন করে।
H2SO4 => 2H+ + SO4=
CH3COOH => CH3COO- + H+
লুইস তত্ত্ব অনুযায়ী অ্যাসিড এর সংজ্ঞা লেখ।
যে সকল পদার্থ অন্য কোন পদার্থ থেকে ইলেকট্রন জোড় গ্রহণ করতে পারে তাদের অ্যাসিড বলে।
উদাহরণ : Cu2+ , BF3 , AlCl3 ইত্যাদি অ্যাসিড।
Cu2+ + :NH3 => [Cu(NH3)4]2+
অ্যাসিড এর প্রকারভেদ
উপাদান অনুযায়ী অ্যাসিড দুই প্রকারের হয়। যথা : জৈব অ্যাসিড ও অজৈব অ্যাসিড।
জৈব অ্যাসিড: যেসব জৈব যৌগ এর জলীয় দ্রবণ H+ আয়ন দেয় তাদের জৈব অ্যাসিড বলে। জৈব অ্যাসিডে কার্বন পরমাণু থাকে। জৈব অ্যাসিডের উদাহরণ হল : অ্যাসিটিক অ্যাসিড, ফরমিক অ্যাসিড ইত্যাদি।
অজৈব অ্যাসিড: যেসব অজৈব যৌগ এর জলীয় দ্রবণ H+ আয়ন দেয় তাদের অজৈব অ্যাসিড বলে। অজৈব অ্যাসিডকে খনিজ অ্যাসিড ও বলে। অজৈব অ্যাসিডে কার্বন পরমাণু থাকে না। অজৈব অ্যাসিডের উদাহরণ হল : হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড, সালফিউরিক অ্যাসিড ইত্যাদি।
তীব্রতা অনুযায়ী অ্যাসিড দুই প্রকারের। যথা তীব্র অ্যাসিড ও মৃদু অ্যাসিড।
তীব্র অ্যাসিড: যেসব অ্যাসিড জলীয় দ্রবণে অধিক H+ আয়ন দেয় তাদের তীব্র অ্যাসিড বলে। যেমন নাইট্রিক অ্যাসিড, হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড ইত্যাদি।
মৃদু অ্যাসিড: যেসব অ্যাসিড জলীয় দ্রবণে কি আয়ন দেয় তাদের মৃদু অ্যাসিড বলে। অধিকাংশ জৈব অ্যাসিড গুলি মৃদু অ্যাসিড। যেমন অ্যাসিটিক অ্যাসিড , কার্বনিক অ্যাসিড ইত্যাদি।
অ্যাসিডের বৈশিষ্ট্য লেখ
(i) অ্যাসিড ছাদে অম্ল বা টক হয়।
(ii) অ্যাসিড নীল লিটমাসকে লাল করে।
(iii) ক্ষারকের সঙ্গে বিক্রিয়ায় অ্যাসিড লবণ ও জল উৎপন্ন ।
অ্যাসিড ক্ষার নির্দেশক কাকে বলে ?
যে সমস্ত জৈব যৌগ অ্যাসিড বা ক্ষারের সংস্পর্শে নিজেদের বর্ণের পরিবর্তন দ্বারা অ্যাসিড বা ক্ষার কে চিনতে সাহায্য করে, তাদের অ্যাসিড ক্ষার নির্দেশক বলে।
যেমন :- লিটমাস, ফেনলপথ্যালিন, মিথাইল অরেঞ্জ, মিথাইল রেড ইত্যাদি ।
অ্যাসিডের সংস্পর্শে বিভিন্ন নির্দেশকের রং কেমন হয়?
নির্দেশক | অ্যাসিড দ্রবণে রং |
---|---|
লিটমাস | লাল |
মিথাইল অরেঞ্জ | গোলাপি-লাল |
ফেনলপথ্যালিন | বর্ণহীন |
মিথাইল রেড | লাল |
অ্যাসিডের ক্ষার গ্রহীতা কাকে বলে?
কোন অ্যাসিডের একটি অণুতে যতগুলি প্রতিস্থাপনযোগ্য হাইড্রোজেন পরমাণু থাকে অথবা একটি অণু জলীয় দ্রবণে আয়নিত হয়ে যতগুলি H+ আয়ন উৎপন্ন করে সেই সংখ্যাকে অ্যাসিডের ক্ষারগ্রহীতা বলে।
যেমন: HCl এর ক্ষারগ্রহীতা 1, H2SO4 এর ক্ষারগ্রহীতা 2 এবং H3PO4 এর ক্ষারগ্রহীতা 3 ।
আরহেনিয়াসের তত্ত্বের সীমাবদ্ধতা গুলি কি
আরহেনিয়াসের তত্ত্বের সীমাবদ্ধতা
(i) আরহেনিয়াস এর মতবাদ অনুসারে কোন যৌগকে অ্যাসিডরূপে কিংবা কোন যৌগ কে ক্ষার রূপে কেবলমাত্র জলীয় দ্রবণেই গণ্য করা হয়।অন্য দ্রব্যকে নয়।
(ii) জলীয় দ্রবণে H+ আয়ন মুক্ত অবস্থায় থাকে না।এটি হাইড্রক্সোনিয়াম (H3O+) রূপে থাকে।
(iii) আরহেনিয়াস এর মতবাদ অনুযায়ী C6H5NH2 বা CH3NH2 কে ক্ষার বলা যাবে না যদিও এরা ক্ষার।
(iv) হাইড্রোজেন পরমাণু একটি ইলেকট্রন বর্জন করে H+ আয়ন উৎপন্ন হয়। এর ইলেকট্রনের কোনাে কক্ষক নাই, কেবলমাত্র কেন্দ্র আছে। এর ব্যাসার্ধ প্রায় 10-13 cm. স্বল্প আয়তনে এক একক তড়িৎ থাকায় আকর্ষণ বল তীব্র। তাই ইলেকট্রন জোড়কে তীব্রভাবে আকর্ষণ করে। এটি জলের অক্সিজেন পরমাণুর ইলেকট্রন জোড়কে আকর্ষণ করে এবং প্রথম যােজ্যতার মাধ্যমে HO+ আয়ন তৈরি করে।